November 21, 2024, 8:37 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া পূবালী ব্যাংক কর্মকর্তা বাড়ি ফিরেছেন। পুলিশ বলছে, দাম্পত্য কলহের কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকার একটি হোটেলে অবস্থান করছিলেন। অবশেষে, শুক্রবার রাতে তিনি বাড়ি ফিরে এসেছেন।
ওই ব্যাংক কর্মকর্তার নাম রাজিব আহমেদে (৪০)। তিনি পূবালী ব্যাংকের কুমারখালী শাখায় জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। রাজিব কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বামনপাড়া গ্রামের ইব্রাহিম আলীর ছেলে।
গত ২২ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় কুমারখালী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শেরকান্দি এলাকা থেকে তিনি নিখোঁজ হয়েছিলেন বলে দাবি ছিল পরিবারের। ওই দিন রাতেই কুমারখালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী রায়হানা পারভীন। এ ছাড়া তাকে উদ্ধারের দাবিতে মানববন্ধন করেন পরিবারের লোকজন।
ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী রায়হানা বেগম জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তার স্বামী তার ফোন থেকে কল করেন এবং তার বাড়ি আসার কথা জানান। তখন রায়হানা তার পিতার বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলাতে অবস্থান করছিলেন। এর ঘণ্টাখানেক পর তিনি বাড়িতে আসেন। তিনি নিরব চিলেন এবং তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করতে নিষেধ করেন।
ফিরে আসার খবর রায়হানা তার শ্বশুরবাড়ি ও পুলিশকে জানান। রাত সাড়ে ১১টার দিকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন এসে তাতে কুমারখালী থানায় নিয়ে যান।
রায়হানা জানান, তিনি সঙ্গে ছিলেন। বিষয়টি জানার পর তিনি থানায় দায়ের করা জিডি তুলে নেওয়ার পর পুলিশ তাকে রাজিবের ভাইদের হাতে তুলে দেন। রাজিব এখন ভেড়ামারাতে তার ভাইদের কাছে রয়েছেন।
কুমারখালী উপজেলার শেরকান্দি এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন রাজিব। তার দুটি শিশু সন্তান রয়েছে। সেখান থেকে রাজিব নিয়মিত ব্যাংকে যাওয়া-আসা করত।
রায়হানা জানান, নিখোঁজের কয়েক দিন আগে তিনি খোকসায় তার বাবার বাড়িতে যান। ২১ ডিসেম্বর রাতে রাজিব রায়হানাকে জানান তিনি শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) গ্রামের বাড়ি ভেড়ামারা যাবেন। এরপর ২২ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার সঙ্গে কথা বলে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু বের হওয়ার ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর থেকে রাজিবের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।’
পারিবারিক কলহের ব্যাপারে তিনি জানান, কলহ ছিল। তার কিছু আচরণ ও তার বাবার বাড়ির কিছু বিষয় রাজিবের পছন্দ ছিল না। এগুলো নিয়ে ঝগড়া হতো।
ব্যাংক কর্মকর্তা রাজিব আহমেদের বড় ভাই সাইদুল ইসলাম সান্টু জানান, ‘স্ত্রীর সঙ্গে রাজিবের পারিবারিক কলহ ছিল। রাজিবের শশুর বাড়ির লোকেদের কারনে এটা তীব্র হতে তীব্রতর হতে থাকে। রায়হানা বিষয়গুলো না মিটিয়ে সবসময়ই তার বাবার বাড়ির পক্ষ নিয়ে চলতো। মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে রাজিব আত্মগোপনে চলে যায়।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম জানান, পারিবারিক অশান্তির কারণে রাজিব আহমেদ স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন। তিনি মানসিকভাবেও কিছুটা বিপর্যস্ত।
ওসি জানান নিখোঁজের পর থেকে তিনি একাধিক সিমও ব্যবহার করেছেন। প্রযুক্তি ব্যবহার করে জানা যায় খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকার একটি হোটেলে অবস্থান করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে তার ভাইদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
Leave a Reply